Thursday, October 23, 2008

আকাশের ছায়ায় সে একা

একটু ধারাল হাসি আর অনেক উষ্ণিষ কথা
কিংবা আবশ্যক শব্দের স্বল্পমাতাল ঘ্রাণ
নতুন লাল জুতায় চড়ে আদিকাল হেঁটে আসে
হেঁটে আসে কৃত্রিম পেলব মুখশ্রী
তাতেই চঞ্চল হয় তারুণ্য উঠোন
আর দগ্ধ মগজ নিয়ে সটান দাঁড়িয়ে যায়
অগণিত বধির তীরন্দাজ

তোমার ঘ্রাণ আর শব্দের মন্থন অন্য কোথাও
মহাপ্রাসাদ আর মহাসড়কের মিলিত কোলাহলে
শীতল অন্ধকারে আলো জ্বালো তুমি
আর শরাব বিলাও মুগ্ধ সাকির পৌরাণিক পদচিহ্ন মেপে
বেদম শক্ত করে লুকিয়ে রাখো স্বপ্নের ঝুলি
অশ্রু-কষ্ট-ক্রোধ বৃষ্টির আঁধারে
তবু কোন ফসকে যাওয়া রাতে
বৃক্ষেরা শুষে খায় কান্নার রস
আর তোমার ঢেকে রাখা সমস্ত কুহক
প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ধরণী কাঁপিয়ে দেয় সহসা একদিন...

টিপাইমুখ অতঃপর

ষোড়শী নদীর বুকে কংক্রিটের জোয়াল বাঁধ
যে বাঁধের চোয়াল গড়িয়ে নামে রক্ত আর ঘাম
তোকে ডেকেছি সেই দুর্লঙ্ঘ নামে
মিথ্যা ভয় তোকে তাড়িয়ে বেড়ায়
কংক্রিট কিংবা ঘাসের জঙ্গল, সবখানে
তুইও হেঁটে যাস লম্বা পদক্ষেপে
পরিত্যাক্ত বেশভূষা তোকে ছায়া দেয়
আর তুই আলোর অভিধান থেকে শব্দ চুরি করে
অন্ধকারের পঙক্তি সাজাস
নারীর অবয়ব নিয়ে দুঃস্বপ্ন কতক
তোকে থামতে দেয় না কোথাও
দাঁড়াতে দেয় না ক্ষুধা আর রোদ্র অনেক
তবু তুই ঘোলাটে মলাটে মুড়ে কবিতা কতক
মেঘনার মোহনায় চলে যাস কোন এক গোধুলি বেলায়

ছন্দের মাতাল ক্ষুধায় ঝাপিয়ে পড়িস
যে তিমির জলাধারে
তোকে দিয়েছি সেই গহীন কালো নামের সত্ত্বাধিকার...

দখিনা উদ্বাস্তু

তুমি হেঁটে আসো বহুদূর থেকে
আমি নৈবেদ্য সাজাই ঘাসের বিছানায়
যতটুকু তোমার আটপৌরে হাসি
নোনতা সমুদ্র ছুঁয়ে আসা ঘ্রাণ
আকাশ আর উদ্বাস্তুর ঘামে ভেজা তৈজস
ততটুকু বিশুদ্ধ ভীষণ, কসম!
অস্ফুট যেটুকু তোমার বাতাসে মিলিয়ে যায়
দেওদারু বন চিরে
কিংবা শায়কের মতো বিঁধে উষর দেয়ালে
ঋদ্ধ সে অবয়ব ঝেড়ে ফেলো না
যাতনার কাফন পড়ে সার বেঁধোনা
নাটকের রঙ্গমঞ্চে কখনও আবার
সেই তো চিরায়ত পথিক তুমি
একমুঠো ছায়া শুধু চেয়ে নিও মেঘের দুয়ারে...

জলজোছনার ঘ্রাণ

নীলাভ রাত হাঁটে আমারই পাশে
অন্তহীন হওয়ার কথা ছিল দুজনার
জলজোছনা জলাধার পেরোতেই
দুঃসংবাদের ভেজা নৌকা দুলে ওঠে
দক্ষিণমুখী জোয়ারের টানে
এবার তবে গন্তব্য কোথায় বলো?
দ্বীপগুলি ভেসে যাচ্ছে আকাশে
আর পানিতে সুরঙ্গের ঘ্রাণ
মহৎ দৈবলোকে যাওয়ার স্বপ্নগুলো
অকস্মাৎ পথ পেয়ে যাবে বুঝি
আর মৃত্যু হবে অভিযাত্রিক...

নীলাভ রাত হাঁটে আর গল্প বলে রক্তরাগের,
আমরা স্বপ্নে প্রতিফলিত জলজোছনা পেরোই
হাতে হাত রেখে...

জলজ বিশ্রাম

ভুলে যাওয়া অন্ধকারে ডুব দিয়ে
ঢক ঢক গেলা যাক নোনতা শরাব
তোমরা যারা কালো চামড়ার জাতক
সারি বাঁধো পিঁপড়ের নিয়মে
নামতে থাকো লাল উপত্যকা বেয়ে
সাবধান, ক্ষুদিরামের দেখা পেলে কেউ
মাড়িয়ে দিওনা লাশের কার্ণিশ
তাকিয়ায় সাজিয়ে রাখার মতো
মেদবহুল ইতিহাস আমাদের
কিনতে হয়েছে কয়েক দিঘি রক্তের দামে
এখন মরিচিকা তলোয়ার খোলো প্রকাশ্য আলোয়
লজ্জায় ভাসুক সকাল, গবাদি পশু
পৃথিবী লাফাতে লাফাতে অনেক ক্লান্ত হলে
আমরা নেকাব নামিয়ে দেবো সময়ের মুখে...

আহ! পিপাসা...

আজ আবার উঠছে জেগে ইন্দ্রিয় গভীর
পুরনো স্পর্শের ঘ্রাণ পূবে ও দক্ষিণে
আপন মানবীকে সবুজ বোতলের ওমে
জমিয়েছিলাম অন্ধকুঠুরে, একান্ত নির্জনে
দিন যতো যায় বাড়ে মাদকের তেজ...

এক জোড়া তৃষ্ণাক্ষুব্ধ ঠোঁট আমার
আর জগতজোড়া পিপাসার ল্যান্ডস্কেপ
মৃত্যুর তসবীর মতো সাজবে ধরণী
তুমি শুধু গুনে যাবে একাকি পদচিহ্ন
তবু অনুমতি নেই পানের, কস্মিনকালেও
এক ফোঁটা আবেহায়াত, সবুজ তরল...

Monday, March 19, 2007

যাতনার রাতলিপি

মিথষ্ক্রিয়ারা হয়তো হারাবে শেষে
অচেনা-হলুদ-নীরব-নতুন দেশে
ইথারে পোড়াও স্মৃতির ডায়েরী তবে
শুনেছি সেখানে দুর্মর জেগে 'বে
তোমার স্বপ্ন, আমার অসার গাঁথা
ভালবাসা, সুখ, কিলবিলে নীল ব্যাথা।