মিথষ্ক্রিয়ারা হয়তো হারাবে শেষে
অচেনা-হলুদ-নীরব-নতুন দেশে
ইথারে পোড়াও স্মৃতির ডায়েরী তবে
শুনেছি সেখানে দুর্মর জেগে র'বে
তোমার স্বপ্ন, আমার অসার গাঁথা
ভালবাসা, সুখ, কিলবিলে নীল ব্যাথা।
Monday, March 19, 2007
যাতনার রাতলিপি
Tuesday, March 13, 2007
অসমাপ্ত
কখনো রাত্তির আসে সশব্দ প্রপাতে
ভয়াল স্বাপদের অশুভ প্রশ্বাসে
ঝড় ওঠে উঠোন জুড়ে
ঘুমের চোয়াল গড়িয়ে নামে
তরল আতঙ্ক বিশেষ
আমরা যেন নির্ঘুম নিরব বাদুড়
আকাঙ্ক্ষার তীক্ষ্ণ নখরে খামচে থাকি
অস্তিত্বের কৃষকায় কার্ণিশ...
Friday, March 9, 2007
কষ্টের তিমির লোবান
কষ্টের লোবান চিনো মেয়ে?
তিমির গহীনে তার গন্ধের মাতাল মোহ
বড় হতবাক হই প্রায়শই
কত জল গড়ালো হলুদ প্রস্রবণে
কত বাজ জ্বলে গেলো, বেমালুম
দুপুরের প্রখর আকাশে
তবু নিঃশেষ আঁকড়ে থাকতে হবে
কষ্টের তিমির লোবান?
কী দারুণ বিমর্ষ আকাশ আমার!
সতেরো শ্রাবণের মতো বৃষ্টির
আকুল নিদাঘ তিয়াস
তবু কষ্টের কঠিন তপ্ত ধোঁয়ায়
বেমালুম উড়ে যায় মেঘের বাগান
আর কী দহন-রোদন দেখো!
তৃষ্ণার উষর বুকে ছুরির ফলার মতো
ঝরঝর নেমে আসে এসিডের ফোঁটা
আহা মেয়ে! বোঝনি কখনো বুঝি!!
প্রেমজ
বুচ্ছো? আমার ঘুম আর স্বপ্ন ফিকশানের মতো
রাঙা এক রাজকন্যার স্মৃতি সহসা প্রকান্ড দাবানল হলে
আমার অস্তিত্ব অনেক পুরনো কয়লার মতো ধিকিধিকি জ্বলে
স্বপ্নের নাভি বরাবর ছুটে আসে পাথরের চাঙর
যাদুঘরের প্যাঁচানো সিঁড়ি বেয়ে রাতের নিষিদ্ধ প্রহরে
সার বেঁধে হেঁটে আসে প্রত্মতাত্ত্বিক আগ্নেয়াস্ত্র
উদ্ধত ফনা তুলে ঘিরে ফেলে আমার ঘুমের স্বদেশ
আর কি অদ্ভুত! তুমুল আক্রোশে ছুঁড়ে দেওয়া
প্রত্যেকটি গোলায় রাঙা এক রাজকন্যার নাম।
জলপাইরঙা স্বদেশ
নিষিদ্ধ স্রোতের বক্ররেখা বেয়ে সন্ধ্যা নামলো আবার
ফেব্রুয়ারির পিছলে যাওয়া পথে
উন্মত্ত হয়েছে অল্প কয়েকটি ক্ষুধা, বিস্ফোরণোন্মুখ!
হয়েছে পাথরের মতো জমাট, বোধ করি অল্প ক'জন
তবু মাংসপেশি ছিড়ে লাল ক্রোধ ছড়িয়ে পড়লে
কালচে হয়ে উঠতে পারে জলপাইরঙা স্বদেশ
ছাপ্পান্ন হাজারে আজ আমি ছাড়া কোন উন্মাদ নেই
ঘোষণা দিচ্ছি তাই, হ্যালোওওও!!
ভাবিনি কখনও
প্রতিধ্বনি করার মতো কোন দেয়ালও থাকবেনা
আশ্চর্য! এই বধিরালয় একদিন স্বদেশ ছিল!!
বিলাসী বিষণ্ণতা
দুঃখের লোহিত উপকূলে চিরন্তন আবাস আমার
ধবল উষ্ণতায় আল্পসের গভীরে হারালেও
শেষমেষ ফিরতে হয় লালচে বালুকাবেলায়
বিকালী ঢেউয়ের ঘায়ে একাকি ভাসতে হয় ছোট্ট ডিঙায়
একাকিই হাঁটতে হয় নরম মেঠোপথে
অন্ধ তিমিরের নিরুদ্দেশ পথে
অন্ধকারে কিসের গন্ধ,
কিসের ভেজা নুন সাঁতরে বেড়ায়
শরীরের গলিতে শিরায়
বুঝতে দাও আমায় আবার
বিমর্ষ কুহক বুকের গভীরে পুষে
মেঘের সাঁতার কেন বারবার ফিরে আসে
আমার ছোট্ট আকাশটায়
কেন আলোগুলো আগুনপতঙ্গ হয়ে
ঝাঁপ দেয় কালের কৃষ্ণগুহায়
কেন স্বপ্নেরা নিঃশব্দে গলে পড়ে
ঘুমের দেশে, অসীম গোপনীয়তায়
নিরুদ্দেশ গলিপথের মন্থর একাকি পথিক
পিকাসোর জটিল ফ্রেমের পর্দা ফুঁড়ে
একাকিই ছুটতে হবে তোমাকে আবার
ধুম্রবাষ্পে একাকি হারিয়ে খুঁজতে হবে
অরভিলের বাদামী ডানা
যুদ্ধংদেহী ভূগোলের বিষণ্ন প্রান্ত হাতড়ে
একাকিই খুঁজতে হবে
আরাধ্য সেই টুকরো বিছানা..
নক্ষত্রেরা হারিয়ে যাক
কালচে নীল সমুদ্র-ছোবলের ভীড়ে
একদিন যারা প্রতিবিম্ব তুলেছে জলমানবদের চোখে
খুব করে চাইছি এখন
হারিয়ে যাক সেই নীল নক্ষত্রেরা।
যে আকাশে কুৎসিত বারুদের গোলা
পুড়তে চাই মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে,
সে আকাশ নক্ষত্রদের নয়।
যে বাতাস চিল আর শকুনের,
উন্মত্ত হিংস্রতায় আঁচড়ে নেয়া
রক্ত আর নাড়িভুড়ির গন্ধ যেখানে
কবর রচেছে বুনোফুল, গুল্মলতার
সে বাতাসে বক আর বালিহাঁস সাঁতরাতে পারেনা।
সব পায়রা গুলিবিদ্ধ হোক,
সব পদ্মফুল পিষ্ট হোক,
সব শুভ্রতা হোক দেশান্তরিত, চিরতরে।
সন্ধ্যাসারস
রাতগুলো কুহকী রানারের মতো...
ঝরে পড়া হলুদ বর্ণমালা
আনমনে বয়ে নেয় যোজন যোজন
ভেজা ভেজা শব্দের নিবিড় গন্ধে
জেগে ওঠে ঠোঁট আর গ্রিবার কম্পন
হঠাৎ নিঃশব্দ জোনাকির মতো
কারো দূরতম স্মৃতি কথা বলে ওঠে
সত্যিই, রাতগুলো দুর্দম রানার আর
তুমি তার সন্ধ্যাসারস, নীল সরোবরে একা...
দক্ষিণমুখী বাতাসের নিবিড় স্বজন
এপিটাফের ঘ্রাণ
তোমরা হেঁটে যাও কবরের গলুই ছুঁয়ে
ঝুঁকে দেখো একবার আদিম রক্তের ঘ্রাণ
ইতিহাস যদি কেঁদে ওঠে কখনো হঠাৎ, দেখবে
প্রয়াত জনসভা ঘুমিয়ে গেছে ভীষণ মমতায়
স্বপ্ন দেখতে বলি তবুও তোমাকে আবার
ইতিহাসে নাক ডুবিয়ে দাও পরম আহ্ণাদে
গভীর আস্বাদে খুঁজো সভ্যতার গোপন হীরক
উজ্জ্বল আলোয় তন্দ্রা হারিয়ে হও পরম প্রদীপ
দেখো জাগছে কিনা অজানামুখী তরুণ পথিক
তবুও ঘুমিয়ে গেছে যারা নরম ঘাসের হৃদয়ে
মিশে গেছে রক্তে আর ইতিহাসের গোপন কোঠায়
রেখে গেছে মহীরুহ, সবুজ ফলের জাজিম
শিয়রে তাদের রুদ্ধ প্রশ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ো আবার
অস্তগামী সূর্যের মুখর লালচে আলোয়...
লু হাওয়ার মাঠে সবুজ পদচিহ্ন
অজানা আলোর খোঁজে হেঁটে যাই আমরা দ'ুজন
কোমলতা নেই দিগন্তের কোথাও, লু হাওয়ার গান শুধু বাজে
নারীর পরশ কবে শুভ্র কার্পাসের সতীর্থের মতো
হলুদ বাস্প হয়ে দক্ষিণে ভেসে গেলো,
আমাকে কোথায় নিতে চাও তুমি??
কোন লালচে মরুতে উটের খোাঁড়া পায়ের পাশে
কবর হবে আমার, বলো বেদুইন মানবী!
আলতারাঙা পায়ের গতি এত দুর্বার, কে জানতো...
এই দেখো , ব্যবিলন পেরোচ্ছি আবার,
জিরোতে দাও এক ফোঁটা, নারী আমার
ঘোলাটে ছায়ায় বুঝতে দাও আঙুর রসের ঘ্রাণ
গাছের চাতাল ফুঁড়ে দেখো আকাশের উজ্জ্বল শপথ.
আমিও কথা দিলাম, হিজাজের লাল আলোয়
তোমার চেহারা ঝলসে ওঠার আগে
কখনও বন্য নেকড়ের সাথে আপোস করবোনা...
প্রিয়তমা-২
নরম হিম হিম সন্ধ্যায় ছায়াঘন স্বপ্নের মতো
এমন ঘনঘোরে আবার ডাকলে কেন, বলো মায়াবতী?
শ্রাবণের প্রশস্ত সিঞ্জনে তোমার উষ্ণতা খুঁজেছি কতদিন
দিগন্তের কালো পর্দায় দৃষ্টি ডুবিয়ে ভেবেছি
হলদে শাড়ির আঁচল বেয়ে আবার আসবে তুমি
আলতো মুছিয়ে দিতে পথিকের অশ্রØ-শ্বেদ
তোমাকে খুঁজতে গিয়ে প্রশস্ত বেলাভূমে
চোরাবালির নরম হৃদয় ছুঁয়ে এসেছি কতবার
বলাকার আকাশ আমাকে দিয়েছে সূর্যাস্তের রঙ
ওই রঙ ছুঁয়ে জোনাকির মতো নত্র হয়ে গেছো তুমি
আমি গ্রীক পুরাণ চষে চুরি করেছি ইকারুসের ডানা
আর আত্মহত্যার মতো নরম স্বপ্ন নিয়ে
উল্কার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছি জ্বলন্ত মহাশূন্যে
হে অগ্নিময় মহাজগত! আমাকে পুড়িয়ে দেবে দাও
শুধু একবার, অন্ধ-হাতড়ে ফেরা সবুজ মাধ্যাকর্ষে
নাক ডুবিয়ে নিতে দাও প্রিয়তম চেনা ঘ্রাণ...
সুগন্ধী গোলাপী দেয়াল...
মুহূর্তের পাটাতনে নামে মহাকাল, নিরব-সন্ধ্যায়
জানো কি, দু কদম পেরোলেই পৌঁছি অবলিলায়
ব্যাবিলন, পারস্য, মেসোপটেমিয়ায়,
বর্শার ছায়ায় ফুঁসে ওঠা দুর্লঙ্ঘ্য দুর্গ প্রাকারে,
কিংবা অর্ধমৃত উপনিবেশে কোন দেমাগী দুপুরে
চোখের অবসন্ন ইঙ্গিতে লালচে বালিয়াড়ি ফুঁড়ে
ঝাঁক বেঁধে ঝলসায় বেদুইন তলোয়ার
মেডিটেরেনিয়ান উগলে দেয় স্পার্টার গোপন বহর
উদ্ধত মাস্তুল-উৎসবে কাঁপে ট্রয়ের বেলাভূমি
তুমি জানোনা তীক্ষণ দৃষ্টি আমার কী অনায়াসে
ছিঁড়ে ফেলে ইতিহাসের অবতল ঢালের চাদর
কত সহজেই বতুতার অদম্য অশ্বক্ষুর
শোনায় আমায় গ্রানাডীয় প্রকম্পিত দামামা
কী দুর্লঙ্ঘ্য মাদকতা সে উন্মাদ বিচারণে!
আহা, জানতে যদি প্রিয়তমা! কখনো একবার,
তবে সুগন্ধী নিশান এঁকে গোলাপী দোপাট্টায়
এভাবে দিতেনা রুখে মরিচিকা রাজপথ?
অনেক রক্তে-ঘামে বিনিদ্র-রজনী জেগেও
শিখতে পারিনি প্রিয়তমা, পারছিনা কোন মতে
কিভাবে পেরোবো ওই সুগন্ধী গোলাপী দেয়াল...
ওখানেই থাকবে তুমি অধরা
ওখানেই থাকবে তুমি অধরা?
পাতাঝরা শিরিষের মাঝরাত এখানে এখন
ক্ষয়ে গেছে পান্ডুর চাঁদের আধেক
মহাকালে উড়ে চলা আলস্য গলুইয়ে
লাশ হয়ে পড়ে আছি বহুদিন
বহুরাত অন্ধ তারার ছায়ে কালপুরুষের তীর
নির্ভিক পেরিয়েছে বুকের দেয়াল
কখনো তাকাও যদি অতীতে আবার
দেখো কালো জলে স্বেচ্ছায় ভ্রান্ত মাস্তুল
প্রশান্তীয় ঘূর্ণিপাকে ডুবতে চলেছে যেন
অদ্ভুত সমর্পনে, নিমগ্ন অবলিলায়...
খুঁজে চলি একা-একা
প্রহরের প্রাচীন বনেদী পদশব্দ
বুকের মরুভূমে এঁকে যায় অহরহ
কিসের সঙ্কেত কে জানে?
নরম মরমে হানা দিওনা মহাকাল
মগ্ন চোখদুটো চলে গেছে দুরে
কেড়ে নিয়ে অযুত স্বপ্ন-ঝাঁক
লবণাক্ত সূক্ষ্ম স্রোতধারা
এঁকেবেঁকে মিশে গেছে কবেই
অগ্নিগর্ভা মেডিটেরেনিয়ানে...
ম্যাগিলান-কম্পাস ধার করে দেখো
একা একা খুঁজে চলি অবিরাম
সোনালী ফুলেল চঞ্চল সৌরভে আঁকা
একজোড়া অযতন আলতার দাগ...
প্রিয়তমা
একা একা দেয়াল পেরিয়ে পৌঁছুলে কোথায় মেয়ে
দেয়ালের ওপাশে কাঁটাতার, শ্বাপদচরণের অগভীর ছাপ
ওদিকে চোরাবালি, ঘোরসওয়ার নেই কোথাও
শুধু যদি দেখতে অসীম অন্তরে
টুকরো এক নগ্ন সবুজ বদ্বীপ শুধু জেগে
উপকূল ছুঁয়ে যাওয়া দক্ষিণা স্রোতের ভাজে শুধু
ভাসিয়ে দিলাম হলুদ একটি খাম....
নীল কষ্ট...
খুব কাছের কেউ চলে গেলো যেন। কাশফুল নেই কোথাও। অনেকগুলো নীল মানুষের বিষণí কান্না আমার মাথার দুপাশে চেপে বসেছে। আমিও ব্যাথায় নীল হবো ভাবছি।
কষ্টগুলো অদ্ভুত, আনন্দের মতো নয়। কষ্টগুলো কাউকে কি দেয়া যায়? দেওয়া ঠিকও নয় সম্ভবত। এমনিতেই গোমরা আকাশ, মেঘের ঝালর। আরো একমুঠো বিষণí কথোপকথন ছুঁড়ে দিয়ে কী আর হবে...
অন্তর্বর্তী দুটো রাতের
নির্ঘুম রাতের পরে আরেকটি নির্ঘুম..
অনুভূতিগুলো নাটাইয়ে গেঁথে
উড়িয়ে দিয়েছিলাম ভোর রাতে
বাতাস ছিল পড়শির দুয়ারভেদী
কারো গোলাপী শাড়ির গলুই ছুঁয়ে
হিম-হিম মিঠা দমকা বাতাস
আমার রাতগুলোকে নিয়ে গেলো
আরব্যরজনীর নরম আকাশে
ভাবছি, দ্বিধাগুলো ঝেরে ঝুরে
উড়াল দেবো আমিও এবেলা...
ভুলোমন ব্যাস্ত বিকেলে...
ধারাপাতে চকচকে বর্ণমালা
ঘুমিয়ে গ্যাছে ভীষণ আদরে
ছাব্বিশের পরে সাতাশ ছিল তখন
এখন দৌড়ে আসে তিরাশি
আর নব্বুইয়ের পরে চনমনে সতেরো
তবু বর্ষার নির্দোষ বিকেলে
চা'য়ের মতো অপচয় হলেম আমি
চৌরঙ্গীর কার্ণিশ ঘেষে
হাঁটার কখনো শেষ ছিল কি?
ধারালো লিফটতো নিখাঁদ হয়নি কোথাও
আর বোকা খোকা! জানোনা,
বোয়িংয়ের ডানায় ভাসলেই
আকাশ ছোঁয়া যায়না...
Wednesday, March 7, 2007
ভিজে গেলো সন্ধ্যাবাতি
রিক্সার জানালা ভেদি চোখে
অশ্রুর মতো গল্প
পোস্টমডার্ণ সংলাপে আমরা পৌঁছে যায়
রঙিন বিপনিবিতানে
দিনের সমস্ত ক্লেদ গড়িয়ে জমছে দেখি ধনীর পেয়ালায়
সামান্য বিরতিতে গুটি গুটি পায়ে বৃষ্টিতে নামি
ভিজতে হবে এই বেলা সত্যিই...